ফরিদপুরের মধুখালীতে চাঞ্চল্যকর ডাকাতি মামলার ৬ আসামি আটক
ফরিদপুরে একটি ছাই (কার্বন) তৈরির কারখানায় ডাকাতির ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র, প্রাইভেটকার ও লুন্ঠিত মালামাল।
গ্রেফতাররা হলেন – ডাকাত দলের সদস্য দীঘলীয়া গ্রামের মো. নিজাম শেখ (৩৮), আব্দুল্লাহ আল মিরাজ (২৮), মো. সজিব শেখ (২৬), মো. রাজু খান (৩০), মধুখালীর মো. ইমরান হোসেন (৩৮), বেনাপোল এলাকার সাহা জুয়েলার্সের মালিক লিটন কুমার সাহ (৩৩)।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩ টায় ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) শেখ মো. আবদুল্লাহ বিন কালাম সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সম্মেলনে শেখ মো. আব্দুল্লাহ বিন কালাম বলেন, ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দিঘলীয়া গ্রামে জিং সিং ট্রেডিং কোম্পানি লিমিডেট নামে একটি ছাই (কার্বন) তৈরির কারখানা আছে। ওই কারখানার পরিচালক ওয়াং ফিই (৫৯) তার স্ত্রী জিনফিই ফওকে নিয়ে কারখানায় থাকেন।
গত ১৪ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৭টার দিকে পাঁচজনের একটি ডাকাত দল ওই কারখানায় ঢুকে অস্ত্রের মুখে নগদ তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা ও একটি সোনার ব্রেসলেট, একটি চেনসহ মোট ছয় লাখ ৬০ হাজার টাকা ও মালামাল নিয়ে যায়। এসময় ডাকাত দলের সদস্যরা চারটি গুলি ছুঁড়ে ও লাঠি দিয়ে ওই দম্পতিকে মারধর করে চলে যায়।
এ ঘটনায় গত ১৬ ডিসেম্বর ওই কারখানার ব্যবস্থাপক মো. রহিম শেখ বাদী হয়ে মধুখালী থানায় ডাকাতির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।
সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন কর বলেন, গত বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই ডাকাত দলের সদস্য দীঘলীয়া গ্রামের মো. নিজাম শেখকে (৩৮) গ্রেফতার করেন। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী যশোরের বেনাপেল এলাকা হতে আব্দুল্লাহ, সজিব ও রাজুকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া এই চার ব্যক্তি গত শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ফরিদপুরের পাঁচ নম্বর আমলি আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাইসা সরকারের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে তাদের জেল হাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম জানান, এ ডাকাতি মামলার সূত্র ধরে গত শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে মধুখালী রেল গেট এলাকা থেকে ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে সাহা জুয়েলার্সের মালিক লিটন গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত একটি শুটার গান ও ডাকাতি করা সোনা জব্দ করা হয়।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) চম্পক বড়ুয়া বলেন, রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এ ডাকাতি মামলায় গ্রেফতার ইমরান ও লিটন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তরুণ বাসারের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে তাদের জেল হাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) শেখ আব্দুল্লা বিন কালাম জানান, এ ডাকাতির ঘটনায় জড়িত বাকি আসামি ও লুন্ঠিত টাকাসহ অন্যান্য মালামাল উদ্ধারের জন্য অভিযান অব্যহত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।